মহেশখালী থানার নাকের ডগায় নারী নির্যাতন মামলার আসামী! অথচ গ্রেফতারের খবর নেই
আপডেটঃ ৫:৪৯ অপরাহ্ণ | আগস্ট ১২, ২০১৪

জসিম উদ্দিন সিদ্দিকী, কক্সবাজার
মহেশখালীতে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার আসামী ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এনিয়ে ভুক্তভোগির মাঝে নানা সংশয়-আতংক বিরাজ করছে বলে জানা যায়।
মহেশখালী উপজেলার বড় মহেশখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা জনৈক ছিদ্দিক আহমদের মেয়ে ছকিনা খাতুন (৪০) অভিযোগ করেন, আদালত আমার আসামীকে প্রায় ১ বছর আগে গ্রেফতারের জন্য মহেশখালী থানা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু অদ্যবধি পুলিশ রহস্যজনক কারনে আসামী আটক করতে সক্ষম হয়নি। অথচ আসামী প্রায় সময় থানার আশে পাশেই অবস্থান করে আসছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ এপ্রিল স্বামীর অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ছকিনা কক্সবাজার সদর মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ সাল (সংশোধিত ২০০৩) এর ১১ (গ) ধারায় মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে মামলাটি কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন আদালতে বিচারধীন রয়েছে। (মামলা নং ৫৮৩/১৩)। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন কক্সবাজার সদর মডেল থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক মাহবুবুর রহমান। তিনি গত ৫ জুন ২০১৩ সালে আদালতে উক্ত আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। এই মামলার আসামী সর্ম্পকে স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার জানান, জনৈক মৃত. রহিম বকুসর ছেলে গোলাম কদ্দুস (প্রকাশ) ননাইয়া একজন দুষ্টু প্রকৃতির ব্যক্তি হিসেবে সবার কাছে পরিচিত। সে কক্সবাজারসহ এলাকার অনেক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা প্রতারনামূলক আতœাসাৎ করেছে। বাদী ছকিনা খাতুন আরো জানান, বিগত ১৯৯৮ সালের ১৬ জুন ইসলামী শরীয়তের বিধান মোতাবেক আসামীর সাথে আসামীর বিয়ে হয়। আসামী নারী নির্যাতনকারী, নারী লোভী, যৌতুক লোভী, দাঙ্গাবাজ, পরধনলোভী ও নানা ফৌজদারী অপরাধে জড়িত রয়েছে। বিয়ের ফলশ্রুতিতে তার সংসারে ২ ছেলে রয়েছে। তাদের নাম সাহাব উদ্দিন (১৩) ও গিয়াস উদ্দিন (১০)। বিয়ের পর থেকে আসামী যৌতুকের দাবীতে প্রায় সময় তাকে নির্যাতনসহ নানা অত্যাচার করে আসছিল। সংসার ও সন্তানদের ভবিষৎতের কথা বিবেচনা করে আসামীর সমস্ত অত্যাচার ও নির্যাতন সহ্য করে বাদী। অন্যদিকে আসামী ৬ বছর যাবৎ সংসারের খোঁজ-খবর না নিয়ে গোপনে কক্সবাজার শহরের সমিতি পাড়ায় চলে আসে। বিগত ১৩ সালের ২৫ এপ্রিল সকালে বাদী খবর পায় আসামী কক্সবাজার শহরের সমিতি পাড়ায় ভাড়া বাসা নিয়ে বিয়ের নামে অবৈধ সংসার করে যাচ্ছে। ঘটনাস্থলে আসামীর সাথে বাদীর দেখা হলে জানতে চায় বাবার বাড়ি থেকে যৌতুকের টাকা বাবৎ ১লাখ টাকা এনেছে কি না। পরে ছকিনা অনিহা প্রকাশ করলে আসামী তাকে ব্যাপক মারধর করে। তার (বাদীর) চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে গিয়ে তাকে উদ্ধারের পর কক্সবাজার শহরের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করে। এতে নিরুপায় হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানার তৎকালীন ওসি জসিম উদ্দিনকে বিষয়টি অবগত করে এবং ওসির আন্তরিক সহযোগিতায় আসামীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়।
এবিষয়ে ছকিনা খাতুনের ভাই এম. জসিম উদ্দিন ও এম. আমান উল্লাহ অভিযোগ করে বলেন, কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন আদালত থেকে আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি হয়েছে প্রায় ১ বছর আগে। অথচ আসামী থানার পাশেই থাকে। কিন্তু পুলিশ কি কারনে আসামীকে আটক করছে না তা বুঝা যাচ্ছেনা। অপরদিকে আসামী ইতোপূর্বে জামিন পাওয়ার পর বাদী ও স্বজনদের নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে। তাই ধুর্ত এই আসামীকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবী জানিয়েছে বাদী পক্ষ। তা না হলে বাদীকে প্রাণ নাশসহ অপূরণীয় ক্ষয়-ক্ষতি করার আশংকা প্রকাশ করেছে।